পীরগঞ্জে একটি বিযয় নিয়ে তৃমুখি মামলা।




সিনিয়র রিপোর্টার আব্দুর রাজ্জাক।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ৩ নং খনগাঁও ইউনিয়নের, খনগাঁও গ্রামের গত (২৭ মার্চ ২০২৩) সোমবার দুপুর অনুমান ০১.৩০ মিনিট সময়ে দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে মন্দির মেরামত কাজে বাধা ও মারপিটের ঘটনায় ৩ টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গেছে।

উক্ত ৩ টি মামলার ঘটনার তারিখ একই  সময়টা সুদু একটু পার্থক্য থাকলেও একই
ব্যক্তিগন দুই মামলার আসামি।

এবিষয়ে মন্দিরের পুজারী মৃত জয়সিং বর্মনের পুত্র একাদশ বর্মন (৬৫), গত (২৯ মার্চ ২০২৩) বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩১।

আসামিরা হল উপজেলার বিশ্বাস পুর গ্রামের, ১। মৃত আব্দুস ছোবাহানের পুত্র মোঃ মমির উদ্দিন (৬৫), ২। মোঃ আজগর আলীর ৪ পুত্র মোঃ গোলাপ হোসেন (৫০), ৩। মোঃ মোবারক আলী(৫০), ৪। মোঃ নুর আলম (৪৪), ৫। মোঃ নুর ইসলাম(৫৮), ৬। মোঃ তফির উদ্দিনের পুত্র মোঃ সাহেব আলী (৪৩), ৭। মোঃ গোলাপ এর পুত্র মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (২৫), ৮। মোঃ মন্টুর পুত্র মোঃ আতিক (২২), ৯। মোঃ নুর ইসলামের পুত্র মোঃ আনোয়ার হোসেন (৩৫)সহ আরও অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন।

আর একটি মামলা করেন ৩ নং খনগাঁও   ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত), মোঃ মোনোয়ার হোসেন (৫৮), গত (২৭ মার্চ ২০২৩) বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০/৫০ জনকে আসামি করেন। মামলা নং ৩০।

আসামিরা হল উপজেলার খনগাঁও গ্রামের ১।অতুল চন্দ্রের পুত্র রাম কৃষ্ণ রায়(৫২), ২।মুরাবী মহন রায়ের পুত্র মনোজিৎ চন্দ্র রায় (৬৫), ৩।দুন্দি বর্মনের পুত্র হরিলাল (৫০), ৪। ভুপাল চন্দ্র রায়ের পুত্র প্রতাপ চন্দ্র রায় (মানিক)(৩৭), ৫।রমেশ চন্দ্র রায়ের পুত্র জ্যোতিশ চন্দ্র রায় (৩৫), ৬।জয় গোলাপের পুত্র প্রতাপ চন্দ্র রায় (৫২), ৭।বসুনাথ রায়ের পুত্র কৈলাশ চন্দ্র রায় (৪৭), ৮। সুধীর চন্দ্র রায়ের পুত্র লক্ষীকান্ত রায় (৩৫),সহ আরও অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন।

আরও একটি মামলা করেন উপজেলার বিশ্বাস পুর গ্রামের মৃত আজগোর আলীর পুত্র মোঃ গোলাপ (৫৫), গত (২৯ মার্চ ২০২৩) বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করেন।
মামলা নং ৩২।

আসামিরা হল উপজেলার খনগাঁও গ্রামের,১। মৃত মুরাবী মহনের পুত্র মনোজিৎ চন্দ্র রায় (৫৬), ২।ক্ষিরোদ চন্দ্র রায়ের পুত্র জয়ন্ত কুমার রায় (২২), ৩। রমেশ চন্দ্র রায়ের পুত্র জ্যোতিশ চন্দ্র রায় (৫৩), ৪। মৃত অতুল চন্দ্র রায়ের পুত্র রাম কৃষ্ণ রায় (৪৪), ৫। হরিলাল চন্দ্র রায়ের পুত্র বিকাশ চন্দ্র রায় (২৪), ৬। মৃত ভুপাল চন্দ্র রায়ের পুত্র প্রতাপ চন্দ্র রায় (মানিক)(৫৩), ৭। মৃত নিবারণ চন্দ্র রায়ের পুত্র মিলন সিংহ রায় (৩৫), ৮। সুধীর চন্দ্র রায়ের পুত্র লক্ষীকান্ত রায় (৪৫)সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জন।

বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি অ্যাডঃ রবীন্দ্র ঘোষ ও ঠাকুরগাঁও জেলা সভাপতি গৌউর হরি জানান যে, উপজেলার ৩ নং খনগাঁও ইউনিয়নের খনগাঁও মৌজার হিন্দু জনসাধারণের দাবি, সি এস খতিয়ান ৭১৯, দাগ ৩২৫, জেল এল ২৯। ০০. ২২ শতক জমি যাহা লাখোরাজ খনগাঁও
শ্রী শ্রী - গোবিন্দজিউ ঠাকুরবিগ্রহের পক্ষে সেবাইতদং অনারেবল মহারাজা জগদীশনাথ রায়  পিং মহারাজা স্যার গিরিজানাথ রায় রাহাদুর কে,সি,আই, ই সাং ও থানা দিনাজপুর পোঃ দিনাজপুর রাজবাটী।

উক্ত জমি দেবোত্তর সম্পত্তি  হিন্দু জনসাধারণের ব্যবহার্য  
দীর্ঘদিন যাবত খনগাঁও হিন্দু জনসাধারণ, মা রক্ষা কালীর পুজা ও মা  দূর্গা পুজা  করিয়া আসিতেছেন। শ্রী শ্রী গোবিন্দজিউ ঠাকুর বিগ্রহের  মন্দিরটি  বিলুপ্ত হওয়ার  কারনে বর্তমান  মন্দির কমিটি সভায় আলোচনা করেন। মন্দিরটি মেরামত এবং কালী ও দূর্গা মুর্তিগুলি নতুনভাবে রং করার সিদ্ধান্ত সর্বো সম্মতি ক্রমে গৃহীত হওয়ায় গত (২৭মার্চ ২০২৩)   মন্দির ঘর মেরামত ও মুর্তিগুলি নতুনভাবে রং করার কাজ শুরু করেন। দুপুর অনুমান ১১.৩০, মিনিট সময়ে তহসিলদার  মোঃ মনোয়ার হোসেন ২জন আনসার  সদস্য  ও ২জনগ্রাম পুলিশকে  নিয়ে মন্দির নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান করেন। বাধা প্রধান করে তহসিলদার  মন্দির স্থান ত্যাগ করে চলে যান। 

পরবর্তীতে  বর্নিত মন্দির ঘরটি মেরামত ও মুর্তিগুলি নতুনভাবে রং করার কাজ চলাকালে উক্ত তারিখ দুপুর অনুমান ০১.৩০ মিনিট সময়ে, আসামিরা দলবল সহ হাতে দেশিও ধারালো অস্ত্র সস্ত্র নিয়া দলবদ্ধ হয়ে উক্ত মন্দিরে অনধিকার প্রবেশ করে নির্মিত ওয়াল ভাংচুর করে এবং মন্দিরে থাকা ৩ টি মুর্তি ভাংচুর করে এসময় মন্দির কমিটির লোকজনসহ পুজারীরা বাঁধা নিষেধ করিলে তাদেরকে এলোপাথাড়ি ভাবে মারপিট করিতে থাকে ফলে তাদের গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম হয় তখন তাদের আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন আগাইয়া আসিলে, আসামিরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করিয়া চলে যায়,পরে স্থানীয়রা জখমিদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে দেয়।

জখমিরা হল, উপজেলার খনগাঁও গ্রামের ১। মৃত  মুবারী মোহনের পুত্র মনোজিৎ রায়(৬৮),২।সনু রাম রায়ের পুত্র সুরেশ চন্দ্র রায় (৩৬),৩। মৃত থেবেন্দ্র নাথ রায়ের পুত্র শশি মোহন রায় (৩২),৪। জগেন্দ্র নাথের পুত্র প্রহল্লাদ রায়(২০),৫।সংকর রায়ের পুত্র পলাশ(২২)।

৩০ নং মামলার ঘটনা এজাহার সূত্রে জানা যায়, উক্ত সম্পত্তি খনগাঁও মৌজার এস এ ১ নং খতিয়ানের ৩২৫ ও ৩২৫/১৫৯৫ দাগে-০.২২ ও ০.২০ শতক জমির শ্রেণী হাট হিসেবে পুর্ব পাকিস্তান প্রদেশের পক্ষে কালেক্টর বাহাদুর দিনাজপুর হিসাবে প্রকাশিত এবং রেজিস্টার ভুক্ত সম্পত্তি হিসাবে দাবী করেন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ৩ নং খনগাঁও ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আনোয়ার হোসেন (৫৮)।

বর্নিত ঘটনার বিষয়ে ৩২ নং মামলা করেন ৩১ নং মামলার ২ নং আসামি আজগর আলীর পুত্র মোঃ গোলাপ হোসেন (৫০)।

বি ডি এম ডাব্লুর সভাপতি ঠাকুর গাঁও জেলা প্রশাসকের নিকট ঘটনার বিষয় জানালে তিনি বলেন আইনগতভাবে সুষ্ঠু ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

বি ডি এম ডাব্লুর সভাপতি পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এর নিকট ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

0 Comments