ফুলবাড়িতে সংখ্যালঘুদের উপর বার বার মিথ্যা মামলা, বি ডি এম ডাব্লু সরজমিনে


 
 
আব্দুর রাজ্জাক সিনিয়র রিপোর্টার:

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর, ৩ নং কাজিহাল ইউপির, করাই গ্রামের মোঃ মনির উদ্দিনের পুত্র মোঃ আব্দুস সামাদ (৪৬) এর বিরুদ্ধে, অসহায় সংখ্যালঘুদের উপর  বার বার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত, নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।

সংখ্যালঘুরা নিরুপায় হয়ে গত (২০ মার্চ ২০২২) সে, সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেন যাহা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে,ও টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত হয়, এতেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে, প্রতিকার চেয়ে একাধিক বার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেও কোনো ফল হয়নি, এখন সংখ্যালঘুরা দিশেহারা নিরুপায়।


বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি অ্যাড রবীন্দ্র ঘোষসহ গত (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩)সে
একটি প্রতিনিধিদল সরজমিনে তদন্তে যান। তদন্ত কালে দলিল পত্র পর্যালচনা করে দেখা  যায়, উপজেলার পুখুরীহাট মৌজার জেল এল নং১৬০। সি এস খতিয়ান নং ১।এস এ খতিয়ান নং ১/১।দাগ নং১৬৫৩। জমির পরিমাণ ১.৭৪ শতক, একটি পুকুর যাহা সি এস, ও এস এ খতিয়ানের মালিক ১। শৈলেন্দ্র নাথ রায় চৌধুরী ২।শিবেন্দ্র নাথ রায় চৌধুরী, ৩। অমরেন্দ্র নাথ রায় চৌধুরী।

রেকর্ডীয় মালিক,শৈলেন্দ্র নাথ রায়, এর পুত্র সুভেন্দ্র নাথ রায় চৌধুরী গত (৮ মে ১৯৭৭) ইং তারিখে। ৯০৪৫ নং রেজিস্ট্রি দলিল মুলে, ১৬৫৩ নং দাগে, ০.৮৭ শতক জমি বিক্রি করেন,১। শ্রী সন্তোষ কুমার রায়,২। মঞ্জু মোহন রায়,৩। চিত্ত রঞ্জন রায়,৪। ললিত মোহন রায়, ৫। সুরেশ চন্দ্র রায়,৬। কালীপদ রায় গনের নিকট। 

রেকর্ডীয় মালিক শিবেন্দ্র নাথ রায়,এর পুত্র নিবারেন্দ্র নাথ রায় গত (১৪ জুলাই ২০১৫) ইং তারিখে। ৩১৫৭ নং রেজিস্ট্রি দলিল মুলে, ১৬৫৩ নং দাগে, ০.৪৩. ৫০ শতক জমি বিক্রি করেন,১। শ্রী সন্তোষ কুমার রায়, ২। চিত্ত রঞ্জন রায়, ৩।কাজল চন্দ্র রায়, ৪। সদানন্দ রায়, ৫। ধনঞ্জয় রায়, ৬। শ্যামল চন্দ্র রায়, ৭। অশনী চন্দ্র রায়, গনের নিকট।

রেকর্ডীয় মালিক অমরেন্দ্র নাথ রায় এর পুত্র রবীন্দ্র নাথ রায় গত (২১ এপ্রিল ২০১৬) ইং তারিখে। ১৭৯৩ নং রেজিস্ট্রি দলিল মুলে, ১৬৫৩ নং দাগে ০.৪৩.৫০ শতক জমি বিক্রি করেন, ১। বিকাশ চন্দ্র রায়, ২। ভোলা চন্দ্র রায়, ৩। চিত্ত রঞ্জন রায়, ৪।কাজল চন্দ্র রায়, ৫। সদানন্দ রায়, ৬। ধনঞ্জয় রায়, ৭। শ্যামল চন্দ্র রায়, ৮। ডাবলু চন্দ্র রায়, গনের নিকট। উক্ত ৩ টি দলিল মুলে বিকাশ চন্দ্র রায় গনেরা ,১.৭৪ শতক সম্পত্তি যাহা পুকুর  ক্রয় করে ভোগদখল ও মাছ চাষ করে আসতেছেন।
 

 
উক্ত পুকুর থেকে বিকাশ চন্দ্র রায় গনেরা গত (২০ এপ্রিল ২০১৯)সে,জালিয়া দারা বেড়জাল দিয়ে ১৩ মন মাছ ধরে পিক - আপ গাড়ীতে করে রংপুর শহরে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হলে স্থানীয় পুখুরী বাজার নামক তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছামাত্রই আব্দুস সামাদসহ ২৩/২৪ জন দলবদ্ধ হয়ে গাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে গাড়ী আটক করে ড্রাইভার এনামুলের শাটের কলার ধরে টেনে হেঁচড়ে গাড়ী থেকে নামিয়ে ধারালো ছোরা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত কাটা জখম করে ও লাঠি দিয়ে মারপিট করে উক্ত সময় বিকাশ প্রান ভয়ে গাড়ী থেকে নামিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় উক্ত সময় মাছের গাড়ীর উপরে থাকা শ্রী রুপান্দকে টেনে হেঁচড়ে গাড়ী থেকে নামিয়ে রাস্তার উপরে ফেলে লোহার রড দিয়ে কুপিয়ে মাথায় রক্তাক্ত জখম করে, তখন ভিকটিমদের আত্মচিৎকারে পাশে কর্মরত থাকা অঞ্জলী রায় আগাইয়া আসিলে তাঁকেও মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে গাড়ীতে থাকা মাছ গুলো অন্যগাড়ীতে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ভিকটিমদের আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা আগাইয়া আসে তাঁদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে ভর্তি করায়।

উক্ত ঘটনার বিষয়ে বিকাশ চন্দ্র রায় থানায় মামলা দিলে থানা মামলা নেয়না পরবর্তীতে বিকাশ বাদী হয়ে গত (২৬ মে ২০১৯)সে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত -৫ (ফুলবাড়ী) দিনাজপুরে আঃ সামাদ সহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নং সি,আর,-৭৯/২০১৯। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।

উল্লেখ্য উক্ত সম্পত্তি (পুকুর)টি ২০০৪ সালে বাংলাদেশ সরকার অর্পিত তালিকায় নেয়, এবং আঃ সামাদ কে গত(২৩ জুলাই ২০২০)সে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি লীজ বন্দোবস্ত প্রদান করেন।

অর্পিত তালিকা থাকা ও লীজ দেওয়ার কারণে, কালীপদ রায়, বিকাশ রায় গনেরা বাদী হয়ে গত (৩১ জানুয়ারী ২০২১)সে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার দিনাজপুরকে বিবাদী করে, বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ আদালত -২ এ লীজ বন্দোবস্ত বাতিল চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নং অর্পিত -৩০৫/১২। মামলাটি বিচারাধীন আছে।

অপর দিকে উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মোবারক হোসেন 
বাদী হয়ে গত (১৮ আগস্ট ২০২০)সে, বিকাশ রায় সহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা, ৭/৮ জনকে আসামি করে, ১৫৩/৪৪৭/১৮৬/৩৩২/৩৫৩/৫০৬/(২)/৩৪ পেনাল কোড -১৭৬০: ধারায়, ফুলবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং ১০/১৪৪।

তদন্ত কালে উপজেলার পুখুরীহাট (ডাঙ্গাপাড়া) গ্রামের সন্তোষ চন্দ্র রায়ের পুত্র বিকাশ চন্দ্র রায় (৩৩) গন জানান উক্ত আব্দুস সামাদ বার বার দলবল নিয়ে পুকুরের মাছ মারতে আসেন, আমরা বাঁধা দিলে আমাদের  উপর হামলা করে মারপিট করেন এবং ভয়ভীতি দেখায় এবং থানায় গিয়ে আমাদের উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত করতেছেন, সংখ্যালঘুরা আরও জানান উক্ত সামাদ রাজনীতি ছত্রছায়ায় আমাদের উপর মিথ্যা মামলা দেওয়া সহ নির্যাতন নিপীড়ন করতছে, আমরা এখন অসহায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মামলা বাজ আব্দুস সামাদ বাদী হয়ে, বিকাশ চন্দ্র রায় গনদের উপর মাছ চুরির অভিযোগ এনে ফুলবাড়ী থানায় এজাবৎ ৩ টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন, প্রতিটি মিথ্যা মামলায় বিকাশ চন্দ্র রায় সহ, ১২/১৬ জন করে আসামি করেন, যাহা বিগত (৪ জুন ২০১৭) মামলা নং ৫/১৮১। গত(৩০ এপ্রিল ২০১৯) মামলা নং ২৯/১১১। গত (১৮ আগস্ট ২০২৩)মামলা নং ২৫/১৪৮।

উল্লেখ্য উক্ত ৫/১৮১ এবং ২৯/১১১ নং  মামলা ২ টি বিজ্ঞ আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত অভিযুক্ত বিকাশ চন্দ্র রায় গনদের মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন, আর ২৫/১৪৮ নং মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে।

তদন্ত কালে আরও জানা যায় গত (১৬ আগস্ট ২০২৩)সে আঃ সামাদ তার দলবলসহ ৬০/৭০ জন লোকজন নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে, বিকাশ রায় গনদের পাড়ায় রাত্রী অনুমান ০২.০০ মিনিট সময়ে বাড়ী ঘরে হামলা মারপিট ও বেড়জাল দিয়ে উক্ত পুকুরে মাছ শিকার করার চেষ্টায়, ১৪৩/৩৪১/৪৪৭/৩২৩/৩৭৯/৫০৬/৫১১/১১৪/৩৪ পেনাল কোড -১৮৬০, ধারায়, বিকাশ রায় বাদী হয়ে, গত (২২ আগস্ট ২০২৩) সে ফুলবাড়ী থানায় আঃ সামাদ সহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং ২৩/১৫৬। কিন্তু থানা পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করে নাই।

উক্ত ঘটনার অভিযোগের ভিত্তিতে বি ডি এম ডাব্লুর প্রতিনিধি দল তদন্ত কালে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মোস্তাফিজার রহমান এর নিকট ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি অল্প দিনহলো এই থানায় এসেছি বেশি কিছু বলতে পারবো না, কিন্তু ওসির নিকট ২৩/১৫৬ নং মামলার আসামি গ্রেফতার করেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন আসামিরা জামিনে আছে, তিনি আরও বলেন এখন থেকে সংখ্যালঘুদেরকে আইন গতভাবে সহায়তা করা হবে।

উক্ত ঘটনার বিষয়ে, বি ডি এম ডাব্লুর সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মোঃ আল কামাল এর নিকট ঘটনার বিষয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে চাইলে তিনি সন্তোষ জনক কোনো সতউত্তর দিতে পারেননি।

বি ডি এম ডাব্লুর প্রতিনিধি দল এহেন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করেছেন এবং সংখ্যালঘুদের উপর বার বার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও নিপীড়ন নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।



 

0 Comments